পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি শহরের হোটেল মালিকরা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তাদের হোটেলে ঘর ভাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে দার্জিলিং শহরের হোটেল মালিকরা এখনো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তাদের হোটেল বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সম্প্রতি উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি। বিশেষ করে বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা এবং বাংলাদেশের কিছু নাগরিকের উসকানিমূলক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির হোটেল মালিকরা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বাংলাদেশের নাগরিকদের আমাদের হোটেলগুলোতে থাকতে দেওয়া হবে না।’
এই সংগঠনটি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় অবস্থিত ১৮০টি হোটেল মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করে।
উজ্জ্বল ঘোষ আরো বলেন, ‘শিলিগুড়ি ছাড়াও আমরা কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের হোটেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তারা দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
তবে দার্জিলিং শহরের হোটেল মালিকরা এখনো এই সিদ্ধান্ত নেননি।
পর্যটনশিল্পের সূত্র মতে, দার্জিলিংয়ে প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক আসেন, যা শহরের পর্যটন খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শিলিগুড়ি ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার পর বাংলাদেশি পর্যটকরা সেখানে বেশি সংখ্যায় আসতে শুরু করেন। এই পর্যটকদের একটি বড় অংশ দার্জিলিং যাওয়ার আগে শিলিগুড়ির হোটেলে এক বা দুই দিনের জন্য অবস্থান করেন।
শিলিগুড়ি শহরটি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি বড় ব্যাবসায়িক কেন্দ্র।
সে ক্ষেত্রে শিলিগুড়ির হোটেল মালিকরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের জন্য ঘর না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তার প্রভাব খুব বেশি পড়ার সম্ভাবনা নেই, কারণ বর্তমানে ভারতীয় ভিসা পাওয়ার জন্য বেশ কঠোর নিয়ম রয়েছে, ফলে বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতের দিকে যাতায়াত করতে আগের তুলনায় অনেক কমেছে। এই পরিস্থিতি পর্যটন শিল্প এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপর কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে শিলিগুড়ি শহরের হোটেল মালিকরা আশাবাদী যে এই সিদ্ধান্তের ফলে তেমন কোনো বড় সংকট সৃষ্টি হবে না।