নেপাল থেকে ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে। আর এ বিষয়ে শিগগিরই নেপাল ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে নেপালের জাতীয় ও সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুৎ আমদানি ও রপ্তানির চুক্তিতে সই করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই নেপাল সফর করবে।
নেপালি দূতাবাস আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি নেপাল এবং নেপালি জনগণের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রশংসা করে তিনি বাণিজ্য, জ্বালানি, সংযোগ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, দিনটি ২০১৫ সালে একটি গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধানের ঐতিহাসিক ঘোষণার জন্য স্মরণীয়।
তিনি বলেন, এই দিনটি আমাদের দেশপ্রেম, গণতন্ত্র এবং বৈচিত্রের নেপালি চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয় এবং নেপালি জনগণের রাজনৈতিক সমস্যা এবং মতপার্থক্য তারা নিজেরাই সমাধান করার ক্ষমতার সাক্ষ্য দেয়।
ঘনশ্যাম ভান্ডারী আরও বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, তখন নেপাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানে সংহতি প্রকাশ করছে।
নেপালের রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি শিগগিরই শেষ হবে।
এসময় তিনি নেপাল ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করে, উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য সংযোগ বাড়াতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনে সংহতি ও সহযোগিতার রূপান্তরকারী শক্তিকে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নেপালি লোক-নৃত্য পরিবেশিত হয়। এতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা, উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, রাষ্ট্রদূত, মিশন প্রধান ও কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতা, গণমাধ্যমকর্মী এবং বাংলাদেশে বসবাসরত নেপালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার ৬ বছর পর বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভারত সম্প্রতি ভারত হয়ে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য একটি চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছে।