দেশে ডলারের সংকটের মধ্যে টানা দুই মাস রফতানি আয়ে ছিল ভাটার টান। অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এই খাত। গেল মে মাসে রফতানি আয়ে আবার উল্লম্ফন হয়েছে।
রোববার (৪ জুন) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি মে মাসের রফতানি আয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়, এই মাসে ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। রফতানির এই পরিমাণ ২০২২ সালের মে মাসের রফতানি আয়ের (৩৮৩ কোটি ২ লাখ ডলার) চেয়ে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
মে মাস মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ ডলার। এই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। তার আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রফতানি হয়েছিল চার হাজার ৭১৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের পণ্য।
টানা দুই মাসের ধাক্কার পর রফতানি খাতের পালে হাওয়া লাগা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদেরা। তারা আশা করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে যে ডলার সংকট চলছে তা আস্তে আস্তে কেটে যাবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৪.৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রফতানি আয় প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার হাজার ৩০৪ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু আয় হয় পাঁচ হাজার ২০৮ বিলিয়ন। সেই রেকর্ডে ভর করে চলতি অর্থবছরে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা ও প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি বেড়েছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রফতানি কমে গেছে।
গত নভেম্বর থেকে টানা তিন মাস পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে ৫৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় হয় রফতানি থেকে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরপর জানুয়ারিতে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়। মোট অংক ডিসেম্বরের তুলনায় কমলেও ওই দুই মাসে প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। কিন্তু মার্চ মাসে তাতে ভাটা পড়ে। আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২.৪৯ শতাংশ কম আয় করে বাংলাদেশ। রফতানি হয় ৪৬৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
এপ্রিলে এই খাতে আরও ধাক্কা লাগে। এই মাসে ৩৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় তা ছিল ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
টানা দুই মাসের ধাক্কার পর রফতানি খাতের পালে হাওয়া লাগা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদেরা। তারা আশা করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে যে ডলার সংকট চলছে তা আস্তে আস্তে কেটে যাবে।