অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গেল এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান এ যুদ্ধে অর্ধশতাধিক সমরযানসহ তিনশতাধিক সেনা সদস্য হারিয়েছে তেল আবিব। এমনকি ইসরায়েল এ যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করতে চাইলে তার জন্যও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এমন অবস্থায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পরিণতি নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরান।
ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী তথা আইআরজিসির কমান্ডার ইন চিফ মেজর জেনারেল হোসাইন সালামি জানান, ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের শক্তি ক্ষয় করার যুদ্ধে রয়েছে। এভাবেই তারা ক্রমান্বয়ে প্রভাব বিস্তার করতে থাকবে। গাজার প্রতি সমর্থন জানিয়ে শনিবার তেহরানে অনুষ্ঠিত এক র্যালিতে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় হামাস ও ইসলামিক জিহাদের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সমর্থনেও বক্তব্য রাখেন তিনি। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা ইরানের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে আসেন।
কমান্ডার ইন চিফ মেজর জেনারেল হোসাইন সালামি কমান্ডার ইন চিফ বলেন, এটাই ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। হামাস ও ইসলামিক জিহাদ অক্ষয় শক্তি। তারা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার স্বপ্নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফিলিস্তিনিরা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতি। ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনি যুবকদের ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
এ সময় জেনারেল সালামি পশ্চিমা সরকারগুলোকে ভণ্ড সরকার বলেও কটাক্ষ করেন। জানান, মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতে তারা নৈতিকভাবে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সামনে পড়েছে। ইরানের এই সামরিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এটা তাদের রাজনৈতিক পরাজয়। এমনকি এই ইস্যুতে মার্কিন অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। জানান, গাজা যুদ্ধের কারণে বহু মুসলিম-অমুসলিম রাষ্ট্র ইসরায়েলি এবং আমেরিকান পণ্য বয়কট করবে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধা হামাস ও ইসলামিক জিহাদ। একই দিন হামাসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে লেবানন ফ্রন্টে ইসরায়েলের ওপর হামলা শুরু করে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদল হিজবুল্লাহ। এ সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যাসহ প্রায় আড়াইশ’ নাগরিককে বন্দি করে হাসাস যোদ্ধারা।
এরপরই গাজা উপত্যকাজুড়ে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তেলআবিবের এ হামলায় হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা, স্কুল ও বেসামরিক ভবনসহ কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি। নির্বিচার এ হামলায় নিহত হয়েছে ১২ হাজারের বিশ ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ৮ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি।