অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সাধারণত রাজনৈতিক সরকারের আমলে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সরকারেরপ্রধানের সফরসঙ্গীর বহর বিশাল হয়ে থাকে। তবে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে। জাতিসংঘ সফরে প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রটোকল সব মিলে বাংলাদেশ থেকে মোট ৫৭ জনের একটি প্রতিনিধিদল আগামী মঙ্গলবার নিউইয়র্ক যাবে। প্রধান উপদেষ্টা সফর শেষ করে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার পথে রওনা হবেন ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে।
জানা গেছে, নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে নির্ধারিত বক্তৃতা দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতায় বাংলাদেশে ৫ আগস্ট—পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের দর্শন প্রতিফলিত হবে। বিশেষ করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের গর্বিত ও মর্যাদাশীল দেশের জনগণ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব পরিমণ্ডলে কীভাবে নিজেদের তুলে ধরবে, সেটিই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা। দেশের ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি ভূরাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদাত্তভাবে আহ্বান জানাবেন।
এদিকে ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।
এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নিতে যাওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন। বাংলাদেশ মিশন আশা করছে, ৫০টি দেশের সরকারপ্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এদিকে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূসের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
এ তালিকায় রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শফ, বাহরাইনের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী সালমান বিন হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিসহ জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থার প্রধান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন।