বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, রওশন সড়ক, নাওজোড়, ইসলামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করেন। এতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অন্তত অর্ধশত কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছেন। এরপর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চান্দনা চৌরাস্তায় লিবাস নিটওয়্যার, হাসান তানভীর ফ্যাশনসহ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ঢাকা জয়দেবপুর সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ, র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শ্রমিক অবরোধের কারণে সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
এদিকে আন্দোলনে নামা শ্রমিকদের একটি অংশ নাওজোড় এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও রাস্তার ওপর কাঠ ও বাঁশ ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে বাসন থানা পুলিশ, র্যাব ও শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের ধাওয়া করে। এ সময় শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট মহাসড়কে ধরিয়ে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া নাওজোড় থেকে ইসলামপুর ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকায় সড়কে শ্রমিকরা বিভিন্ন কারখানায় ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করে। তবে নাওজোড় এলাকায় পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে সকাল ১০টার দিকে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়। কিছু সময় পরই কোনাবাড়িসহ আশপাশের এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আন্দোলনের মুখে বেশ অর্ধশত কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া কোনাবাড়ি এলাকায় শ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে এক নারী শ্রমিক নিহতের পর কোনাবাড়ি ও আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ বলেন, সকালে চান্দনা এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে এরপরই নাওজোড় এলাকাসহ আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা ভাঙচুর করেন এবং সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের কারণে কোনাবাড়ি, নাওজোড় ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় অন্তত ২০টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।